দেশে বর্তমানে কুটির শিল্পসহ প্রায় ৭৫ লাখ অতিক্ষুদ্র (মাইক্রো), ক্ষুদ্র ও মাঝারি (এমএসএমই) শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যা দেশের মোট অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৯৮ শতাংশ এবং জিডিপিতে এসএমই খাতের অবদান হচ্ছে প্রায় ২৫ শতাংশ।
২০০৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত এসএমই ফাউন্ডেশন ঢাকায় ৫টি জাতীয় এসএমই পণ্য মেলা এবং ২০টি আঞ্চলিক এসএমই পণ্যমেলার আয়োজন করেছে। এসব মেলায় মোট ১ হাজার ১০৬ কোটি ৮৮ লক্ষ টাকার সামগ্রি বিক্রয় এবং ১ হাজার ২৯৭ কোটি ১৩ লক্ষ টাকার বিভিন্ন পণ্যের অর্ডার পাওয়া যায়।
এসএমই ফাউন্ডেশনের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারপার্সন কে এম হাবিব উল্লাহ বৃহস্পতিবার বাসস’কে এ কথা বলেন।
সরকার ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উন্নয়নকে গূরুত্ব দিচেছ উল্লেখ করে এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন বলেন, ‘বাংলাদেশের মতো দেশে জনসংখ্যাকে জনসম্পদে রূপান্তরের পাশাপাশি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে হবে’। জাতীয় শিল্প নীতি-২০১৬তে এটা প্রতিফলিত হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ‘এসএমই ফাউন্ডেশন দেশের দশলক্ষ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানের সাথে স¤পৃক্ত কোটি মানুষের সামগ্রিক উন্নয়নের লক্ষ্যে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (২০১৬-২০২০), রূপকল্প-২০২১, জাতীয় শিল্প নীতি ২০১৬, এসডিজি’র পাঁচটি অভীষ্ট লক্ষ্যমাত্রা (১,৪,৫,৮ এবং ৯) এবং অন্যান্য নীতিমালা ও কৌশলপত্র অনুসারে নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জনের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে’।
কে এম হাবিব উল্লাহ বলেন, ‘বাংলাদেশকে ২০২১ সাল নাগাদ মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পখাতের উন্নয়ন ও উদ্যোক্তা সৃষ্টির কোন বিকল্প নাই’। এক্ষেত্রে তিনি জাপান ও চীনের উদাহরণ তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উন্নয়নে আগে ফাউন্ডেশনের নিজস্ব তহবিল থেকে উদ্যোক্তাদের ৪০ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হত। চলতি অর্থবছর থেকে তা ৬০ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। এই ঋন আদায়ের হার শতভাগ বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ফাউন্ডেশন সূত্রে জানা যায়, এসএমই অর্থয়ন সহজীকরণের লক্ষ্যে ‘ক্রেডিট হোলসেলিং’ কার্যক্রমের আওতায় ১১টি সহযোগী ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এসএমই উদ্যোক্তাদের ২০০৯ সাল থেকে সহজ শর্তে সিঙ্গেল ডিজিট (অনুর্দ্ধ ৯%) সুদে জামানতবিহীন ঋণ প্রদান করা হচ্ছে। এ কার্যক্রমের আওতায় আগস্ট ২০১৭ পর্যন্ত ১ হাজার ২শ’ জন এসএমই উদ্যোক্তাকে ঋণ দেয়া হয়েছে, এর মধ্যে ৪৪০ জন নারী উদ্যোক্তা রয়েছেন। এছাড়াও নারী উদ্যোক্তাদের জন্য তিনটি বিশেষায়িত ঋণ কর্মসূচি- ‘গুণবতী, সুকন্যা এবং নীলিমা’ চলমান রয়েছে।
সূত্র জানায়, ২০০৭ সাল থেকে এপর্যন্ত নিয়মিত কার্যক্রমের আওতায় এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য ঢাকা ছাড়াও সিলেট, রংপুর, গোপালগঞ্জ, কক্সবাজার, রাঙ্গামাটি, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, বরিশাল, কুমিল্লা, খুলনা, জামালপুর, বান্দরবান, মৌলভীবাজার, দিনাজপুর, বগুড়া, ঝালকাঠি, যশোর জেলায় এসএমই পণ্য মেলার আয়োজন করা হয়। এই মেলাগুলোতে ৮৫০জন নারী উদ্যোক্তা (অংশগ্রহণকারীদের ৭০%) অংশগ্রহণ করেন।
No comments:
Post a Comment